সারা দেশের মাদ্রাসাসমূহ

মাওলানা ইকবাল বিন হাশিম দা.বা. (সুনামগঞ্জী হুজুর)’র সংক্ষিপ্ত জীবন ও কর্ম

February 10 2020, 04:17

ভূমিকা : পৃথিবীর প্রারম্ভ হতে অদ্যাবধি আল্লাহ পাক এমন কিছু মহামনীষীকে পাঠিয়েছেন, যাঁদের মাধ্যমে তাঁর পাঠানো দীন পরিবর্তন -পরিবর্ধন না হয়ে হুবহু বিদ্যমান আছে।তাঁরা তাঁদের কর্মজীবন দিয়ে এ ধারাকে সজীব করেছেন। তাঁদের সাফল্যমন্ডিত জীবন বর্তমান ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে সাহসিকতার সাথে হিদায়াতের পথে চলার অনুপ্রেরণা যোগায়।পৃথিবীর রূপ-সুষমাকে তাঁরা করেছেন সুশোভিত, সৌন্দর্যমন্ডিত। তাঁদের আগমনে ধরণী হয়েছে ধন্য।তাঁদের উন্নত আখলাক ও গুণাবলীর সুনাম ছড়িয়ে আছে শহর থেকে গ্রাম পর্যন্ত।যাঁদের প্রতিটি কদম মার্জিত ও সুপরিকল্পিত। তাঁদের জীবন চরিত পথহারা মানুষের জন্য পাথেয়। তাঁদের একজন হলেন আমাদের উস্তাযে মুহতারাম শায়খ ইকবাল বিন হাশিম হাফিযাহুল্লাহু তা’আলা।

ইলমে ওহীর রূপরেখা ও সারমর্মের আবেদন ও পয়গামের বাস্তব প্রক্ষিত ও মূর্তপ্রতিক তিনি।ব্যক্তি ও পারিবারিক জীবনে, সমাজ ও প্রাতিষ্ঠানিক জীবনে অনন্য-অসাধারণ চিন্তাধারার বাহক ও বাস্তবায়ক তিনি।স্বল্পভাষী চিন্তাশীল একজন প্রখর ব্যক্তিত্ব সম্পন্ন নীতিবান মানুষ তিনি।আখলাক ও তাহযীব, রিয়াযত ও সাধনা,দ্বীনদারী ও তাকওয়া,সততা ও বিশ্বস্ততা,পরেহজগারি ও স্বচ্ছতা, ইখলাস ও লিল্লাহিয়্যাত, দীনতা ও নম্রতা, দৃঢ়তা ও গাম্ভীর্যতা,মার্যাদাবোধ ও আত্মসচতনা, সহনাভূতি ও সময়ানুবর্তিতা, হেকমত ও কর্মকৌশল, তাওয়াক্কুল ও আত্মসমর্পন, অমায়িক, সদাচারী,স্পষ্টভাষী,উদার, নির্মোহ,নিষ্ঠাবান, আত্মত্যাগী,উস্তাদ ও শায়খদের পূর্ণ অানুগত্যকারী,মুরব্বী ও মুহসিনদের ব্যাপারে পুরোপুরি অাত্মসমর্পণকারী,জীবনব্রতের ব্যাপারে তাওয়াক্কুল ও তুষ্টিসম্পন্ন,ত্যাগ ও কুরবানী, মেহনত ও মুতাআলার কামালিয়ত অর্জনের ব্যাপারে পূর্ণমনোযোগী,বিবিধ মতাদর্শের লোকজন ও দল উপদলের ব্যাপারে সু ধারণাপোষণকারী।
দেশ ও জাতির কল্যাণকামনায় নিবেদিতপ্রাণ ও সৎসাহসী ইত্যাদি গুণাবলীর মূৃর্তপ্রতিক তিনি।

নামঃশাহ ইকবাল উদ্দীন।কুনিয়তঃআবু মাহমুদা।
তাঁর নানা আরিফ বিল্লাহ ক্বারী আব্দুল গফুর রাহ.তাঁর নাম রেখেছিলেন ইকবাল উদ্দিন।
কিন্তু দুঃখের বিষয়, অবুজ অবস্থায় উস্তাদের মাধ্যমে মাদ্রাসায় ভর্তি হওয়ার কারনে মাদরাসার রেজিষ্টার খাতায় ইকবাল হুসাইন লিখা হয়।এ থেকেই সনদ, আইডি ইত্যাদিতে ইকবাল হুসাইন নামে করা হয়।
কিন্তু হযরতের পুর্ব পুরুষ এবং বাবার দিক লক্ষ করে শাহ ইকবাল বিন হাশিম নামে প্রশিদ্ধি লাভ করেন।এবং ছাত্রদের কাছে তিনি সুনামগঞ্জী হুজুর নামে অধিক পরিচিত।

নসবনামঃ
বংশঃ- শাহ ইকবাল বিন হাশিম বিন শাহ ক্বরী আবুল হাসিম বিন মুন্সি বালাজান বিন ছদর আলি বিন আবদুস সামাদ বিন আবদুল বাসির বিন শাহ মাহমুদ রাহ.।

জন্মঃ
২৩মার্চ ১৯৭০ ইংরেজী রোজ বুধবার আসরের সময় আরিফ বিল্লাহ হযরত মাওলানা আবুল হাশিম ও ক্বারিয়া আলেমা খাদিজা বেগমের ঘর আলোকিত করে বি-বাড়িয়া জেলার শরাইল থানার রাণীদিয়া নামক গ্রামে জন্ম গ্রহন করেন।
বর্তমান বাড়ীঃ
সুনামগঞ্জ জেলার দোয়ারাবাজার থানাধীন এরুয়াখাই (তিলোরা কান্দি) গ্রামে সংগ্রামের পর বাড়ী স্থানান্তরিত করেন।
বর্তমান অবস্থানঃ রেঙ্গা মাদরাসায় পড়ানোর সুবাধে তিনি রেঙ্গা এলাকায় বসবাস করেন।

শিক্ষা ও বাল্যকালঃ
সম্ভ্রান্ত শিক্ষিত পরিবারে জন্মগ্রহনের সুবাধে অতি অল্প বয়সেই তাঁর মধ্যে শিক্ষার প্রতি অনুরাগ পরিলক্ষিত হয়।তাঁর সম্মানিতা মাতা একজন আলেমা, আবিদা, সালিহা মহিলা হওয়ার কারণে শিক্ষা জীবনের সূচনা হয় তারই কাছে।তিনি তার কাছ থেকে অক্ষর জ্ঞান এবং কায়দা ও আমপারা সমাপ্ত করেন।
জন্মগতভাবেই তিনি প্রখর মেধার অধিকারী ছিলেন ।ফলে শৈশবেই তাঁর মেধার বিভা ফুঁটে উঠে।
এজন্যই অল্প দিনেই তিনি ইসলামের বুনিয়াদী শিক্ষা তথা কালেমা, নামায, জরুরী মাসাইল ও মাসনূন দোয়াসহ পবিত্র কুরআন মাজিদের তেলাওয়াত শিক্ষা লাভ করেন। পিতা- মাতার স্নেহছায়ায় থেকে সত্য, ন্যায় ও ইনসাফের কঠিন পাঠগুলো সহজেই আত্মস্থ করে নেন। শিশুকাল থেকেই তাঁর সত্তায় লুকিয়ে ছিলো দ্বীনে ইলাহীর তীব্র তৃষ্ণা।
আল্লাহ তাঁকে দান করেছেন বুদ্ধিস্নাত প্রতিভা। সূর্যদীপ্ত যোগ্যতা। শৈশব থেকেই যার বিচ্ছুরণ ঘটতে শুরু করেছিলো।

প্রতিষ্টানিক শিক্ষা লাভের জন্য দুবাজাইল প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ছোট ওয়ানে ভর্তি হন সাত বছর বয়সে । কিছুদিন পড়তে না পড়তেই সকল শিক্ষকদের পরামর্শে তাঁকে বড় ওয়ানে ভর্তি করা হয় ।কিছু দিন পরই বার্ষিক পরিক্ষা চলে আসে এবং তাতে তিনি ক্লাসে ১ নাম্বার হোন।পরের বৎসর তিনি তৃতীয় শ্রেণীতে ভর্তি হোন।এভাবে তিনি প্রাথমিক শিক্ষা সমাপ্ত করেন।
অতঃপর তাঁকে বি-বাড়ীয়ার মদিনাতুল উলূম পাকশীমুল মাদরাসায় ছাফেলা ১ম বর্ষে ভর্তি করা হয়।তথায় প্রথম থেকেই প্রতিটি পরিক্ষায় তৎকালিন সর্বোচ্ছ মার্ক প্রতিটি কিতাবে ৫০ ই রাখতে সক্ষম হন।এখানে এক বৎসর ছিলেন। তখন তাঁর তা’লীমী মুরব্বাী ছিলেন শায়খ আলী আকবর রহ.।
অতঃপর তা’লীমী মুরব্বীর পরামর্শে তার সাথে চলে যান এশাআতুল ইসলাম মুহিউস সুন্নাহ রণীদিয়া মাদরাসায়।তথায় খুব সুনামের সাথে শরহে বেকায়া পর্যন্ত পড়াশুনা করেন।
অতঃপর চলে যান উম্মুল মাদারিস মুঈনুল ইসলাম হাটহাজারী মাদরাসায় সেথায় তিনি জামাত মুখতাসার থেকে কওমী মাদরাসার সর্বোচ্ছ ক্লাস তাকমীল ফীল হাদীস তথা মাস্টার্সে ১০০০মার্কের মধ্যে ৯৯৭মার্ক পেয়ে প্রথম স্থান অর্জন করে শিক্ষাজীবন সমাপ্ত করেন।
তিনি কওমী মাদরাসায় পড়ার সাথে সাথে আলীয়া মাদরাসায় ও লেখাপড়া করেন
দাখিল পরিক্ষা দেন চক চন্দ্রপুর কশবা বি-বাড়ীয়া থেকে। দাখিল পরিক্ষায় ১ম স্থান অর্জন করেন। আলিম পরিক্ষা দেন দৌলতপুর সিনিয়র মাদরাসা থেকে। আলিম পরিক্ষায় বোর্ডে ৬ষ্ট স্থান এবং সিলেট বিভাগের সেরা স্টুডেন্ট নির্বাচিত হন।ফাযিল পরিক্ষা দেন সুনামগঞ্জের মেরওয়াখলা মাদরাসা থেকে। মেধা তালিকায় বোর্ডে ৫ম স্থান অর্জন করেন। কামিল পরিক্ষা দেন জামেয়া রাহিমিয়া তায়িদুল ইসলাম ফতেহপুর থেকে। বোর্ডে ১ম বিভাগে উত্তীর্ন হন।

কর্মজীবনঃ
আল্লামা শাহ আহমদ শফী ও শেখ হাফিজ কাসেম দা.বা.এর সমন্বয়ে বুখারী ও তিরমিযী শরীফ দিয়ে তাঁকে জামেয়া ইসলামিয়া চরখলিফা ভোলা, বরিশালে প্রেরণ করেন।এখানে খুব সুনামের সাথে এক বৎসর দারস ও তাদরিসের দায়িত্ব আনজাম দেন।
অতঃপর হযরত মাও.আবদুল হান্নান রহ.এর আবেদনে সেখান থেকে চলে আসেন জামেয়া ইসলামিয়া গনেশপুর ছাতক এখানেও একবৎসর শিক্ষকতা করেন।
অতঃপর চলে যান মৌলভীবাজারের জামেয়া দ্বীনিয়ায়। সেখানে তিনি সাত বৎসর আবু দাউদ ও মুসলিম শরীফের দারস প্রদান করেন।
অতঃপর সেখান থেকে চলে আসেন জামেয়া ইসলামিয়া দারুল উলূম দেউলগ্রাম মাদরাসায়। সেখানে তিনি শায়খুল হাদীসের দায়িত্ব পালন করার সাথে সাথে তিরমিযি শরীফ ও পড়ান তিন বৎসর।পাশাপাশি তিনি বুখারী ও তিরিমিযি শরীফের দারস প্রদান করেন জামেয়া ক্বাসিমুল উলূম মেওয়া ও জামেয়া ইসলামিয়া বুধবারী বাজার মাদরাসায়।হাদীসের দারস ও তাদরীসের সাথে সাথে ফুলবাড়ী আলীয়া মাদরসায় অধ্যাপনা করেন।

বর্তমানে যে সকল মাদরাসায় খেদমতে নিজেকে ব্যাপৃত রেখেছেন

সিনিয়র মুহাদ্দিস
জামেয়া তাওয়াক্কুলিয়া রেঙ্গা সিলেট
উস্তাযুল হাদীস ওয়াত তাফসীর
মারকাযুদ তিবয়ান ফীল হাদীস মিশর।

শায়খুল হাদীস
জামেয়া তায়্যিবাহ খাদিমুল কুরআন মহিলা মাদরাসা জামালগঞ্জ সুনামগঞ্জ।
মাদরাসাতু আয়শা রা.নাসিরপুর, দিরাই সুনামগঞ্জ।
জামেয়া আমবাড়ী গোপালপুর, দুয়ারা সুনামগঞ্জ।
দারুর রাশাদ পৈলনপুর বাদাঘাট, তাহিরপুর সুনামগঞ্জ।

সরপস্ত
জামেয়া তায়্যিবাহ খাদিমুল কুরআন মহিলা মাদরাসা জামালগন্জ।
মাদরাসাতুত তাকওয়া আল ইসলামিয়া এরুয়াখাই চকবাজার দুয়ারাবাজার।
দারুল আরকাম উত্তরা ঢাকা।

প্রতিষ্ঠাতা মুহতামীম
দারুস সুন্নাহ হুসাইনিয়া এরুয়াখাই, তেলোরা- দোয়ারা বাজার।
দারুস সালাম হুসাইনিয়া হাফিজিয়্যা মাদরাসা তিলোরা দোয়ারাবাজার।

দারস ও তাদরীস
দরসে হাদিসে আসার পূর্বে তিনি প্রতিদিন গোসল করেন, অতপর পরিচ্ছন্ন পোশাক পরিধান করে
সুশোভিত আতর মেখে দাওরায়ে হাদিসের ক্লাসের দিকে যখন তিনি পথ চলেন তখন সামনের দিকে এমনভাবে ঝুঁকে হেটে আসেন , মনে হয় তিনি যেন কোন উঁচু স্থান হতে নিচে অবতরণ করছেন -মনে হতো
যেন রাজকীয় কোন দরবারে অংশ নিতে যাচ্ছেন।অতপর সালাম করে দরসে প্রবেশ করেন। বসার সাথে সাথে দরসে সবাই মনোযোগসহ বসলো কি না,
সে দিকে একবার খেয়াল করে কিতাব পড়ানো শুরু করেন ।
হাদীসে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম -এর ওপর দরুদ পাঠ করে দরসে হাদীস শুরু করেন।সুললিত কন্ঠে মায়াভরা আবেগে ক্বালা ক্বালা রাসুলুল্লাহ এর পাঠ শুরু করেন
হাদীস পাঠের সময় হযরতকে গম্ভীর মনে হয়। যেন খুব মনোযোগ সহকারে রাসূলের অমীয় বাণী সরাসরি শুনছেন। যেসব হাদীসের ক্ষেত্রে আলোচনার প্রয়োজন হতো, সেসব হাদীসের ক্ষেত্রে তিনি সহজ সাবলীল আলোচনায় হাদীসের বিশ্লেষণ তুলে ধরেন।
আইম্মায়ে মাযাহিব ও অন্যান্য মুহাদ্দিসীনেরর মত যখন খন্ডন করেন তখন মাশায়েখে দেওবন্দের পদ্ধতি অনুযায়ী ফিকহে হানাফীর সাথে হাদীসের সমন্বয়ের ক্ষেত্রে তাঁর পান্ডিত্য,অক্লান্ত পরিশ্রম,উৎকৃষ্টতা, একাগ্রচিত্ততা ফুঁটে উঠে।নিজের পসন্দের মতটির পক্ষে যখন কোনো প্রমাণ পেশ করতেন তখন তা একটি স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্যের অধিকারী হত -তখন তা সরাসরি পাঠ করে হানাফী মতের ব্যাপারে ছাত্রদের সংশয়মুক্ত করে দেন।
হুযুর হাদীসের নান্দনিক তরজমা, সরল ফিকহী আলোচনা,হাদীসের রূহ ও সারনির্যাস উদ্ধার করে করে সরসভাবে উপস্থাপন করেনএবং এর স্বাদে নিজে বিভোর হন এবং ছাত্রদের অভিভূত করেন। আধুনিক রীতি-নীতি ও পশ্চিমা দর্শনের অসারতা খুলে খুলে বর্ণনা করেন।
অনেক জটিল মাসআলা ও কঠিন বিষয়কে খুব সহজে বুঝানোর ক্ষেত্রে হুজুরের কোন তুলনা হয়না। হাদীসের ফিকহী বিশ্লেষণের সময় পূর্ববর্তী উলামায়ে কেরামের উল্লিখিত দলীলের পাশাপাশি তিনি এমনসব চমকপ্রদ দলীল ও যুক্তি উল্লেখ করেন, কখনো মনে হতো,এসব দলীল যদি ভিন্নমতাবলম্বীরা জানত,তাহলে এখানে কোন মতপার্থক্যই থাকতো না। বিভিন্ন কিতাবে পড়ে আসা অসংখ্য দলীল ও যুক্তিগুলো হযরতের দলীলের সামনে কখনো অপ্রয়োজনীয় মনে হতো, কিন্তু হযরত তাঁর স্বভাবসূলভ বিনয়ের চাদরে তাঁর ইলমের মাক্বাম সবসময়ই ঢেকে রাখতেন।প্রাসঙ্গিক ক্ষেত্রে তিনি প্রচলিত নানা মত ও ফিরক্বা নিয়ে আলোচনা করেন। কুরআন-হাদীসের আলোকে বাতিল মতসমূহকে খন্ডন করেন সাবলীল ভাষায়।
তিনি যখন কোরআনের কোন আয়াতের তরজমা করেন তাতে খুব সহজে আয়াতের বার্তাটি বুঝে ফেলা যায়।শব্দমালার সিঁড়ি দিয়ে মর্মবস্ততে পৌঁছে যাওয়া যায়।
হুজুর যখন অধিন উৎসাহ -উদ্দীপনার সাথে দরস দেন তখন মনে হয়, নিজের সামনেই যেন হাদীসের ঘটনাগুলো ঘটছে। তখন ছাত্ররা নিজেরাই শানে উরূদের বাস্তবতার সাথে মিশে যায়।তিনি প্রতিটি মাসআলার ক্ষেত্রে প্রথমে প্রাচিন ইতিহাস বর্ণনা করেন।এরপর ইমামগণের ইখতেলাফ তুলে ধরেন। সবশেষে বর্তমান সময় ও প্রেক্ষাপটের সাথে একটি সংগতিপূর্ণ সমাধান দেন, যার ফলে ছাত্রদের সেই মাসআলার ব্যাপারে বাস্তব ও সম্যক জ্ঞান হাসিল হয়।কিন্ত নিজ মাযহাবকে প্রধান্য দিতে গিয়ে তিনি কখনো আসাহহু মা ফিল বাব কে তরক করেন নি।

রচনাবলী
১.তালখীসু সহীহিল বুখারী ওয়া আসানীদিস সিহাহ।
২.আত তিবইয়ান ফী বয়ানে মাযামীনিল কুরআন।
৩.আল কালামুল মুফীদ ফী বাহসিত তাক্বলীদ।
৪.শামসুল উলূম ফী শারহে সুল্লামুল উলূম।
৫.কাইফা নাতাআল্লামুল হাদীস ওয়া কাইফা নু’আল্লিমু বিহি।
৬.অভিনব পদ্ধতিতে নকশায়ে নহবেমীর ওয়া ইলমুল ই’রাব ইত্যাদী।

দাম্পত্যজীবন
তিনি যেমন পরহেজগার ও সম্ভ্রান্ত খান্দানের মানসপুত্র তেমনি তিনি তাঁর জীবনসঙ্গিনী হিসেবে বেছে নিয়েছেন বি -বাড়ীয়ার বিজেশ্বর গ্রামের আরেক পূতঃপবিত্র দ্বীনদার, মুত্তাকী খান্দানের এক ভাগ্যবতি রমণী মুসলিমা আক্তারকে।তিনি বড়ো আদর্শবতী ও পূণ্যবতি। তিনি ত্যাগ নিষ্ঠায়-ভালোবাসায় খিদমত করছেন আমাদের শায়খের।
হযরতের চারজন সন্তান রয়েছেন দুই ছেলে হা.কাউসার ও তালহা এবং দুই মেয়ে মাহমুদা ও মাশহুদা

সমাজিক কর্মকান্ড
ফেরক্বায়ে বাতেলা ও এনজিও মিশনারির আগ্রাসী অপশক্তির মোকাবেলায় আলেম সমাজ ও আম জনতাকে ঐক্যবদ্ধ করার জন্য এবং অসহায়, অনাথ -ইয়াতিম, বিধবা ও দূর্গত মানুষের সেবার জন্য তিনি গঠন করেন”ইখওয়ানুল উলামা ওয়াত তুলাবা চকবাজার, লক্ষীপুর সুনামগঞ্জ।
জনসাধারণ্যে ঐক্য ও একতার সুদৃঢ় বন্ধন স্থাপন করা এবংতাদেরকে ইসলামের সামগ্রিক অবকাঠামো ও মূলনীতীর দিকে আহবান করার লক্ষ্যে এবং বিশেষ তরবিয়াতি প্রশিক্ষণে প্রশিক্ষিত করার জন্য প্রতিষ্ঠা করেন “ইসলামী সমাজ কল্যাণ যুব সংঘ এরুয়াখাই “।
তিনি দারুস সালাম জামে মসজিদ এরুয়াখাই এর পুণঃনির্মাণ করেন।
বায়আত গ্রহনঃ
ইলমে যাহিরের তারাক্কীর জন্য তাঁর উপর ছায়া হিসেবে কাজ করছেন শায়খুল হাদীস আল্লাম শাহ আহমদ শফী দা.বা.ঠিক তেমনিভাবে ইলমে বাতিন বা আত্মশুদ্ধির জন্য তিনি বেছে নেন খলিফায়ে মাদানী আল্লামা আহমদ শফী দা.বা.কে । তাঁর আধ্যাত্মিকতার ছোঁয়া পেয়ে নিজেকে এক উজ্জ্বল নক্ষত্ররূপে নিজেকে আবির্ভূত করেন।

আল্লাহ তাঁকে বাঁচিয়ে রাখুন, আমার মাঝে। কর্মক্ষেত্রে রাখুন, জীবনের শেষ দিনটি পর্যন্ত । তাঁর আলো ছড়িয়ে পড়ুক,পৃথিবীর প্রতিটি ছায়ায়।.

লিখেছেন- মুহাম্মাদ আবদুল্লাহ

Spread the love